Saturday, November 14, 2015

Pondicherry tales

অনেক দিন কোথাও বেরোনো হয়না বলে বেশ কিছুদিন ধরেই অনন্যা ঘ্যানঘ্যান করছিলো। বন্ধুরাও সব সদ্য পিতৃত্ব phase এ ঢোকায় আমিও একটু ল্যাদ খেয়ে গেছিলাম।তাই একরকম তরিঘরি করেই পন্ডিচেরী। 

idea টা এসেছিল যখন আমার এক coleague ওখান থেকে ঘুরে এসে ছবি পোস্ট করলো facebook এ. সমুদ্র আর একটা পুরনো french কলোনীর charm টাই place selection এর main কারণ। যাই হোক দিনক্ষণ ঠিক করে প্লেনএর ticket কেটে ফেললাম।নির্দিষ্ট দিনের আগের রাতের office এর কিছু লাস্ট মিনিট নাটক কাটিয়ে ৬th november ২০১৫ শুক্রবার ভোরবেলা আমি আর অনন্যা বেরিয়ে পরলাম কলকাতা এয়ারপোর্ট এর দিকে। ১০.৪০ নাগাদ আমরা চেন্নাই এ নেমে গাড়িতে উঠে রওয়ানা দিলাম। চেন্নাই থেকে পন্ডিচেরি ১৪০km distance . আমরা পন্ডিচেরির অরবিন্দ autocare services থেকে ট্যাক্সি বুক করেছিলাম।একটা সুন্দর নতুন গাড়ি তে আমাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করলো। রাস্তা খুব সুন্দর। চেন্নাই থেকে বেরোনোর আগেই কত কমার্শিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং কমপ্লেক্স দেখে কলকাতার কথা ভেবে একটা ভারী নিঃশাস ফেললাম। ম্যাপ দেখে আগে মনে হয়েছিল বঙ্গোপসাগর এর পাশ দিয়ে রাস্তা যাবে কিন্তু গোটা রাস্তা খালি সমুদ্রের গন্ধই পেলাম। মাঝে একজায়গায় কড়া মাদ্রাসী ফিল্টার কফি খেয়ে মোটামুটি ১.৩০ নাগাদ আমরা আমাদের guesthouse এ পৌছে গেলাম। কলকাতা থেকে বেশ খানিকটা গবেষণা করে আমি Colonial heritage বলে একটা গেস্ট হাউস এ রুম বুক করেছিলাম। সেই আগ্রা র পর থেকে আমার বড় হোটেল এর থেকে ছোটখাটো বুটিক হোটেল বা গেস্ট হাউসএ থাকতে বেশি ভালো লাগে।আর তাছাড়া পন্ডিচেরি র মত একটা হেরিটেজ টাউন এ আমার এই ছোটখাটো হাউস তা বেশ লেগেছিল ইন্টারনেট এ। বাইরে থেকে দেখে বোঝাত উপায় নেই যে এটা একটা হোটেল।আসলে শহরের এই অংশটা white town নাম পরিচিত। আগে french colony র সময়ে এই অংশে ফরাসী কোয়ার্টার আর ভিলা ছিল। এখন সেইগুলোকে কিছুটা remodelling করে অনেক হোটেল/গেস্ট হাউস হয়েছে।






ঢুকেই একটু চাঞ্চল্য হলো যখন হোটেল এর এক স্থানীয় কর্মচারী straight বলে দিল আমার নামে কোনো বুকিং নেই। যাই হোক শেষ অবধি পাওয়া গেল record আর আমাদের রুম এর চাবি দেওয়া হলো। প্রচুর গাছপালা ঘেরা বাড়িটা দেখেই মনটা ভরে গেল। আমাদের ঘর ছিল দোতলায়। ঘরে ঢুকেই অবাক - একটা প্রকান্ড দোলনা ঘরের ঠিক মাঝখানে।ঘরটাও খুব heritage রেখে খুব esthetically সাজানো।  চারিদিকে oilpainting , পুরনো antique আসবাব , একটা পালঙ্ক যার উপর সেই পুরনো দিনের মত গোল করে মশারি টাঙানো। ACta না থাকলে মনে হত হঠাত ১০০ বছর সময় পিছিয়ে গেছে। 

আমরা আমাদের ব্যাগ রেখেই বেরিয়ে পরলাম পেট কে শান্ত করতে।আসার আগে বিস্তর খোজখবর করা হয়েছে খাবার নিয়ে। তাই এক্সপেকটেশন আর খিদে দুটোই প্রবল অস্তিত্ত জানান দিচ্ছিল। কিছুটা হাঁটতেই একটা রেস্টুরেন্ট(Le Chateau) এর বাইরে দেখি লেখা Todays Special - lobster ravioli with crab meat sauce আর লোভ সামলানো গেল না ঢুকে পরলাম।ঢুকে দেখি আমরাই একমাত্র খদ্দের তাই আমাদের জন্যই সব চালু হলো । আমার অর্ডার তো রেডি ছিল আর অনন্যা দিল grilled মাছ। সাথে আমি নিলাম chilled beer আর অনন্যা একটা জুস। অনন্যার কথাই ঠিক হলো যে রান্নাঘর আমাদের দেখে খোলা হয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ বসার পর খাবার এলো।  খিদে আর অসম্ভব ভালো স্বাদ মিলে ফটাফট খাওয়া শেষ হয়ে গেল । সেখান থেকে আমরা গেলাম শহরের বিখ্যাত confectionary Zuka তে।  চকলেট এর নানারকম innovative delicacy নিয়ে বেশ ইন্টারেষ্টিং দোকান। একটা white chocolate এর পাকোড়া খেলাম আর অনন্যা মনের সুখে cake কিনলো। তারপর ঘরে ফিরে একটা ছোট্ট দিবানিদ্রা। 

সন্ধেবেলার আগে ওঠা গেল না।  উঠে আমরা বেরিয়ে পরলাম সমুদ্রর ধরে ঘুরতে। পন্ডিচেরি খুব ছোট শহর এবং মূল শহরের দ্রষ্টব্য গুলো হেটেই দেখে নেওয়া যায় । চাইলে auto নেয়া যায় কিন্তু বেকার টাকা নষ্ট হয়। এখানে সমুদ্রর ধারটা খুব সুন্দর করে বাঁধিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। এরা বলে Promenade আর এখানে সন্ধ্যে ৬ থেকে সকাল ৭ টা অবধি গাড়ী চলাচল বন্ধ।  ফলে অনেক লোক মনে আনন্দে হেটে বেড়াচ্ছে বসে আছে আড্ডা মারছে বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করছে - সবমিলিয়ে একটা ভালো লাগা পরিবেশ। আমরা ধীরে ধীরে হেঁটে চলে এলাম ভিনায়াগার মন্দিরে। শহরের মত মন্দিরটাও ফাঁকা। লোকে পুজোর ডালা বিক্রি করছে কিন্তু বাকি জায়গার মতন বিরক্ত করছে না। মন্দির এর main আকর্ষণ লক্ষী বলে একটা হাতী। মন্দির এর প্রবেশ্দার এর বাইরে দাড়িয়ে আছে শান্ত হয়ে আর যে তাকে পয়সা দিচ্ছে তাকে সে মাথায় শুঁড় দিয়ে আশির্বাদ করছে। পয়সাটা ঠিক মালিকের হাথে দিয়ে দিচ্ছে। মন্দির তা বেশ সুন্দর।  আরাধ্য দেবতা গনেশ। গনেশ এর নানা রূপ মন্দিরে বানানো নানা রং দিয়ে। 

মন্দির থেকে বেরিয়ে আমরা হেঁটে হেঁটে মাপ দেখে পৌছলাম Cafe Xtasi তে। এটা শহরের বিখ্যাত wooden oven pizza পার্লার। এমন কিছু না হলেও আমরা ডিনার করে গুটিগুটি পায়ে হোটেল ফিরলাম। ফিরে আলাপ হলো হোটেলের ম্যানেজার Sabine এর সাথে।  ফরাসী ছোটখাটো মহিলা। এটাও বুঝলাম হোটেলের বাকি সব boarder ই বিদেশী। 

পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট এ তাজা crossaint খেয়ে আমরা বেরিয়ে পরলাম পন্ডিচেরীর মূল আকর্ষণ Auroville এর উদ্দেশ্যে। এটা শহর থেকে ১৫Km দুরে তাই আমরা একটা Auto রিসার্ভ করে রওয়ানা দিলাম। ঋষি অরবিন্দ ও শ্রী মার আদর্শে তৈরী এক বিস্বনগরী। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের লোক এসে এখানে থেকে সহজ সরল জীবন যাপন করে, নিজের পছন্দ মতন কাজ করে আশ্রমএর সেবা করে । খুব সুন্দর করে বানানো আশ্রম। ভিসিটর সেন্টার থেকে প্রায় ১KM হেঁটে মাতৃমন্দির । তবে মন্দিরের ভিতরে যাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার কারণ দিন দুএক আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে তবে যাওয়া যায়। আমরা বাইরে থেকে ভালো করে দেখে ছবি তুলে ফিরে এলাম। পথে একটা বিরাট বটগাছে প্রচুর পাখি দেখে অনন্যা উত্তেজিত হয়ে পরেছিল। কিছু souvenier কিনে আমরা ফিরে এলাম ১টা নাগাদ। ফিরে সোজা The Promenade হোটেল এ ঢুকে একটা অসাধারণ বুফে লাঞ্চ করলাম । হোটেল এ ফিরে বিশ্রাম নিয়ে সেদিন সন্ধে বেলায় বেরোনো হলো শপিং এ । ফিরে এসে আমরা আবার Promenade এ রুফটপ এ ডিনার করলাম। এবারেও অপূর্ব খেয়ে হোটেল । 

রবিবার সকাল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলো। এর মধ্যে আমাদের রুম পাল্টাতে হলো। দুপুরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে Auto করে গেলাম Baker Street বলে একটা eaterie তে। এ শহরে মোটামুটি সব বড় দোকানেই ইংলিশের সাথে ফরাসিও চলে। ওখানে খেয়ে Zuka তে চকলেট কেনা হলো।  বিকেলে বর্ষার সমুদ্র দেখে আমরা ওখানে একটা সুন্দর churche  এ গেলাম । নাম Sacred Heart Bassilica। কিন্তু অবিরাম বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছিল । রাত্রে আমাদের হোটেল এর পাশে celine's  Kitchen এ lobster আর red snapper খেলাম। ঘরে ফিরে packing করে ঘুম। 

সোমবারও বৃষ্টির কোনো শেষ নেই। তার মধ্যেই আমরা ট্যাক্সি তে চেন্নাই এসে কলকাতার প্লেন এ ফেরত।